নিবন্ধটি সম্পর্কে

লেখক :

أحمد بن عبد الرحمن بن عثمان القاضي

তারিখ :

Sat, Sep 03 2016

বিভাগ :

Jurisprudence

খৃষ্টীয় নববর্ষ উদ্যাপন: শরিয়ত কি বলে

 


খৃষ্টীয় নববর্ষ উদ্যাপন: শরিয়ত কি বলে
 (البنغالية- evsjv-bengali)

 

 


ড. আহমদ বিন আব্দুররহমান আল কাজী   

 


অনুবাদ
আলী হাসান তৈয়ব

 


م2009 - ھ1430
 

 


﴿ حكم الاحتفال بعيد رأس السنة الميلادية ﴾
( باللغة البنغالية)

 

 

د. أحمد بن عبدالرحمن القاضي

 

ترجمة
علي حسن طيب

 


2009 - 1430
 


খৃষ্টীয় নববর্ষ উদ্যাপন: শরিয়ত কি বলে
উৎসব পালন  জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে একটি সামগ্রিক ফিনমিনন। সুনির্দিষ্ট কোনো দিবসকে স্মরণীয় করে রাখার গভীর বাসনা থেকে, অথবা আনন্দ-উল্লাস প্রকাশ, কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করা ইত্যাদি থেকে জন্ম নেয় বর্ষান্তরে উৎসব পালনের ঘটনা।
আল্লাহ তাআলা মানুষের এ স্বভাবজাত বাসনা সম্পর্কে সুপরিজ্ঞাত। তাই তিনি তা প্রকাশের মার্জিত ও সম্মানজনক পদ্ধতি বিধিবদ্ধ করে দিয়েছেন। সৃষ্টিসংলগ্ন সামগ্রিক প্রজ্ঞাময়তা, পৃথিবীবক্ষে মানবপ্রজন্মের দায়দায়িত্ব, আল্লাহর ইবাদত ও দাসত্বের জিম্মাদারি ইত্যাদি বিবেচনায় রেখেই তিনি দিয়েছেন উৎসব পালনে সম্মানজনক বিধান। আনাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ( রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আগমন করলেন। তাদের ক্রীড়া-উল্লাসের ছিল দুটি দিবস। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,’এ দিবস দুটি কি? ‘ উত্তরে তারা বললেন,’ জাহেলী যুগে দিবস দুটি ক্রীড়া-উল্লাসে কাটাতাম।‘ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,’আল্লাহ তাআলা এ দিবস দুটির পরিবর্তে উত্তম দুটি দিবস তোমাদেরকে দিয়েছেন- ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর। [ আবু দাউদ, আহমদ] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু বকর রা. কে বললেন,’হে আবু বকর! প্রত্যেক জাতিরই উৎসব রয়েছে, আর এটা আমাদের উৎসব।‘[ বুখারি ]
মুসলিম উম্মাহর ঈদের সাথে আকিদা-বিশ্বাস ও জীবনাদর্শ সংমিশ্রিত, এবং তা বিজাতীয় সকল উৎসব থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন, আকার-প্রকৃতি, ধর্মসংলগ্নতা, জাতীয় অথবা পার্থিব যে ধরনেরই তা হোক না কেন।
পঁচিশে ডিসেম্বর থেকে পৃথিবীময় শুরু হয় খৃষ্টীয়  উৎসব যা একত্রিশ ডিসেম্বর নববর্ষীয় মহোৎসবের মাধ্যমে শেষ হয়।
আর মুসলমানরা, সজ্ঞানে অথবা অবচেতনভাবে, আল্লাহ তাদেরকে যে সম্মান ও বৈশিষ্ট্য দিয়েছেন, তা বিশ্রুত হয়ে, এ উৎসবে অংশ নিয়ে থাকে।
বহু বিভিন্ন শরয়ি টেক্সট রয়েছে যা উম্মতে মুহাম্মদীর আলাদা বৈশিষ্ট্যের কথা স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করে এবং অন্যান্য জাতি থেকে তাদেরকে যে স্বতন্ত্রিকতা ও উন্নত অবস্থান নিয়ে চলমান থাকতে হবে সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেয়।
আর এতে আশ্চর্যের কিছু নেই। কেননা এ উম্মত সর্বশেষ ঐশীবার্তাবহক জাতি। যাদের নবী হলেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং পবিত্র গ্রন্থ হল  হল মহাগ্রন্থ আল কুরআন।
আল্লাহ তাআলা এ উম্মতকে সর্বোচ্চ সৌন্দর্যে অভিষিক্ত করেছেন, যখন তিনি ঘোষণা দিয়েছেন: ( তোমরা হলে সর্বোত্তম উম্মত, যাদেরকে বের করা হয়েছে মানুষের জন্য। তোমরা ভালো কাজের  নির্দেশ দেবে ও মন্দ কাজ থেকে বারণ করবে, আর আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। ) সূরা আল ইমরান: ১১০
সে হিসেবে এ উম্মত হচ্ছে সর্বোত্তম উম্মত। মায়াবিয়া ইবনে হায়দা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,’ তোমরা সত্তর উম্মতের সংখ্যা পূর্ণকারী। আর তোমরা এ সত্তর উম্মতের মধ্যে সর্বোত্তম এবং আল্লাহর কাছে অধিক সম্মানিত। [ আহমদ, তিরমিযি, ইবনে মাযাহ ও হাকেম ] তিনি আরো বলেছেন,’জান্নাতবাসীদের একশত বিশ কাতার হবে, তন্মধ্যে এ উম্মত হবে আশি কাতার।‘ [ তিরমিযি, ইবনে মাযাহ ও আহমদ ] আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ’আমরা কিয়ামত দিবসে শেষ ও শুরু, আমরা সর্বাগ্রে জান্নাতে প্রবেশকারী, যদিও তাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে আমাদের পূর্বে, আর এসেছি তাদের পরে। তারা মতানৈক্য করেছে। তারা যে বিষয়ে মতানৈক্য করেছে আল্লাহ আমাদেরকে সে বিষয়ে সঠিক পথ দেখিয়েছেন। এটা সে দিবস যে দিবস সম্পর্কে তারা মতানৈক্য করেছে। আর আমাদেরকে আল্লাহ এ বিষয়ে হিদায়াত দিয়েছেন। অদ্যকার দিবস আমাদের। কালকেরটা ইহুদিদের এবং পরশু হল নাসারাদের।‘ [ বুখারি ও মুসলিম ]
ইবনে কাছীর র. বলেছেন,’ এই উম্মত উত্তম কাজে বিজয়ের ঝাণ্ডাবাহী। এ উম্মতের নবী হল মুহাম্মদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, যিনি আল্লাহর তাবৎ সৃষ্টির মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ, রাসূলদের মধ্যে সমধিক সম্মানিত, আল্লাহ তাকে পরিপূর্ণ শরিয়ত দিয়ে পাঠিয়েছেন, যা অন্য কোনো রাসূলকে দেন নি। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  এর পথ ও পদ্ধতি অনুযায়ী অল্প আমল অন্যান্যদের অধিক আমল থেকেও উত্তম।‘ [ তাফসিরুল কুরআনিল আযীম, ২/৯৪ ]

শুদ্ধানুভূতির অভাব, ইমানী দুর্বলতা ইত্যাদির কারণে, বর্তমানযুগের কিছু মুসলমান যীশুখৃষ্টের জন্মতিথি ও নববর্ষের উৎসব ইত্যাদিতে অংশ নিয়ে থাকে, নাসারাদের বেশভূষা, তাদের ধর্মীয় চিহ্ন ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকে, যেমন:
১. ডাক অথবা ইন্টারনেট যোগে শুভেচ্ছা বিনিময়।
২. নাসারাদের সাথে এসব উৎসব পালনে অংশ নেয়া, গির্জায়, হোটেলে, উন্মুক্ত মাঠে অথবা সেট্যালাইট চ্যানেলে।
৩. কৃস্টমাস ট্রি ক্রয়, শিশুদের কাছে প্রিয় বাবানোয়েলের পুতুল ক্রয়, ও ইত্যাদি গিফট হিসেবে নববর্ষের রাত্রিতে প্রদান।
৪. গান-বাজনা, নাচ, অশ্লীলতা, মদ্যপান, মোমবাতি জ্বালিয়ে তার আগুন নেবানো ইত্যাদি কর্মকাণ্ড যা উন্মুক্ত বা ঘরোয়াভাবে করা হয়।
এ উভয় উৎসব, অর্থাৎ যীশুখৃষ্টের জন্মতিথি এবং নববর্ষের উৎসব উভয়টাই উৎসব হিসেবে নেয়া মুসলমানেদের জন্য বৈধ নয়।
যীশুখৃষ্টের জন্মতিথি কুফরসর্বস্ব ধর্মীয় বৈশিষ্ট্যে অবগঠিত একটি দিবস, যেখানে ঈসা আ.কে ঐশিক গুণাবলিসর্বস্ব হওয়া, সৃষ্টিকর্তার মানুষের রূপ পরিগ্রহণ, ছেলে হিসেব আবির্ভাব, ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলে আত্মদান ইত্যাদি ভ্রান্ত বিশ্বাস বিশপ ও খৃষ্টীয় ধর্মগুরুদের কর্তৃক তুমুলভাবে প্রচার করা হয়।
আর দ্বিতীয় দিবসটি হল পার্থিবতা ও অশ্লীলতাসর্বস্ব, যাতে চর্চিত হয় বেলেল্লাপনা, বেহায়াপনা, পাশবিকতাপূর্ণ আচরণ, যা সর্বার্থে মনুষ্য  উপযোগিতারহিত। মুমিনের কথা তো এখানে আসতেই পারে না।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বিষয়ে খুবই সচেতন ছিলেন। একটি ঘটনা থেকে এর সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। এক ব্যক্তি বুওয়ানা নামক জায়গায় উট যবেহ করার মান্নত মানল। সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল,’আমি বুওয়ানায় একটি উট যবেহ করার মান্নত করেছি। প্রত্যুত্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,’ সেখানে কি জাহেলীযুগের কোনো মূর্তি পূজা হত? তারা বললেন,’ না।‘ তিনি বললেন,’সেখানে কি তাদের কোনো উৎসব হত? ‘ তারা বললেন,’ না।‘ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,’তোমার মান্নত পুরন করো। আর জেনে রাখো, আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ হয় এমন মান্নত পূর্ণ করতে নেই এবং এমন মান্নতও পুরন করতে নেই মানুষ যার অধিকার রাখে না।‘ [ আবু দাউদ ]
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,’যে ব্যক্তি মুশরিকদের দেশে বাড়ি তৈরি করল, তাদের উৎসব-দিবস পালন করল এবং এ অবস্থায় সে মারা গেল, তবে তার হাশর-নশর তাদের সাথেই হবে। [ সুনানে বাইহাকি ৯/২৩৪ ]
এধরনের উৎসব পালন অবৈধ হওয়ার কারণ বাহ্যিক ধরন-ধারণে সাদৃশ্যগ্রহণ ও আন্তর বিশ্বাস এদুয়ের মাঝে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। শায়খুল ইসলাম ইবেন তাইমিয়া র. তার প্রসিদ্ধ গ্রন্থ ( ইকতেযাউসিরাতিল মুসতাকিম মুখালাফাতু আসহাবিল জাহীম) - এ বলেন,’সিরাতুল মুসতাকীম হৃদয়ে অবস্থিত আন্তর বিষয়; যেমন আকিদা-বিশ্বাস, ইচ্ছা ইত্যাদি এবং বাহ্যিক বিষয়; যেমন কথা-কাজ, হতে পারে তা ইবাদত, হতে পারে তা খাবার, পোশাক, বিবাহ-শাদি, বাড়ি-ঘর, সম্মিলন ও বিচ্ছেদ, সফর-আরোহণ ইত্যাদি সংক্রান্ত। এইসব আন্তর ও বাহ্যিক বিষয়ের মাঝে সম্পর্ক রয়েছে। কেননা হৃদয়জগতে যে অনুভূতি আন্দোলিত হয় তা বিভিন্নভাবে বাহ্যদৃশ্যে রূপায়িত হতে বাধ্য, আবার বাহ্যিক কাজকর্মও হৃদয়ে তৎসংলগ্ন অনুভূতি জাগ্রত করে থাকে।
আর আল্লাহ তাআলা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রেরণ করেছেন হিকমতসহ, যা হল তাঁর সুন্নত ও আদর্শ, এবং তিনি তাঁর জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন সুনির্দিষ্ট পথ ও পদ্ধতি। এই হিকমতের একটি হল যে তিনি রাসূলের জন্য এমন কথা ও কাজ বিধিবদ্ধ করেছেন, যা অভিশপ্তদের পথ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। অতঃপর তিনি বাহ্যিক বেশভূষায় তাদের উল্টো করতে বলেছেন, যদিও অনেকের কাছে বাহ্যত এতে কোনো বিচ্যুতি মনে হয় না। তিনি এরূপ করেছেন কয়েকটি কারণে। কারণগুলোর একটি হল, বাহ্যিক বেশভূষায় সাদৃশ্যগ্রহণ, যে সাদৃশ্য গ্রহণ করল এবং যার সাদৃশ্য গ্রহণ করা হল, এদুজনের মাঝে ধরন-ধারণে একটা সম্পর্ক কায়েম করে দেয়, যা আমল-আখলাকে সম্মতিজ্ঞাপন পর্যন্ত নিয়ে যায়। এ বিষয়টি সহজেই অনুমেয়; যে ব্যক্তি আলেমদের পোশাক গ্রহণ করে সে নিজেকে আলেমদের সাথে সম্পৃক্ত বলে অনুভব করতে থাকে। আর যে ব্যক্তি সৈনিকদের পোশাক পরে তার হৃদয়ে সৈনিকসংলগ্ন ভাব জন্মে। তার মেজাজও সৈনিকতুল্য হয়ে যায়। যদি না এ পথে কোনো বাধা থাকে।‘ ইবনে তাইমিয়া র. আরো বলেন,’ এ হিকমতের মধ্যে আরেকটি হল, বাহ্যিক ক্ষেত্রে উল্টো করা ভিন্নতা ও বিচ্ছেদ সৃষ্টির কারণ হয়, যা করলে আল্লাহ নারাজ হন এবং যা কিছু পথহারা করে দেয় তা থেকে দূরে রাখে এবং হিদায়াতপ্রাপ্ত ও আল্লাহর সন্তুষ্টিপ্রাপ্তদের প্রতি আগ্র্র্রহী করে। আর এর দ্বারা মুমিন ও আল্লাহর শত্রুদের মাঝে সম্পর্কচ্ছেদের যে বিধান আল্লাহ তাআলা রেখেছেন তা বাস্তবায়িত হয়। আর হৃদয় যত বেশি জাগ্রত থাকবে, প্রকৃত ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানের অধিকারি হবে- এখানে প্রকৃত ইসলাম বোজাচ্ছি, সাধারণভাবে মুসলমানতুল্য বেশভূষা ও বিশ্বাস পালনের কথা বলছি না।- ততোই বাহ্যত ও বিশ্বাসগতভাবে ইহুদি নাসারাদের থেকে আলাদা থাকার অনুভূতি পূর্ণতা পাবে। আর তাদের আচার-অভ্যাস, যা অনেক মুসলমানের মধ্যেই পাওয়া যায় তা থেকে দূরে থাকার মানসিকতা তৈরি হবে। উল্লিখিত হিকমতের মধ্যে আরেকটি হল, প্রকাশ্য বেশভূষায় সাদৃশ্যগহণ বাহ্যত মিলমিলাপ ও সংমিশ্রণ-সম্মিলন ঘটানোর কারণ হয়। হেদায়াতপ্রাপ্ত মুমিন এবং অভিশপ্তদের মাঝে ভিন্নতা ও বৈশিষ্ট্যের দেয়াল উঠে যায়। ধর্মীয় বিষয়ে নয় বরং সাধারণ ক্ষেত্রে তাদের সাদৃশ্যগ্রহণের বিষয়টি যদি এরূপ হয়, তাহলে যেসব বিষয় বিজাতীদের কাফের হওয়ার কারণ সেসব বিষয়ের ক্ষেত্রে তাদের অনুকরণের পাপ-অপরাধ তাদের পাপের মাত্রানুযায়ী নির্ধারিত হবে। এই মূলনীতিটি সবাইকে অনুধাবন করতে হবে।‘ [ ১/৮০-৮২ ]
ইমানাদৃপ্ত স্পর্শকাতর মন ও তাওহীদী ভাবাদর্শে জাগ্রত হৃদয় ব্যতীত এসব অর্থ ও ভাব হৃদয়ঙ্গম করা সম্ভব নয়। আর যারা তথাকথিত ধার্মিক, যাদের ইমানী অনুভূতি কদর্যতায় আক্রান্ত, এসব কথা তাদের কাছে অর্থহীন। বিজাতির সাদৃশ্যগ্রহণ এদের কাছে আদৌ কোনো গুরুত্বের বিষয় নয়। তারা নির্দ্বিধায় অভিবাদন-শুভেচ্ছা বিনিময় করে যায়। তারা এসব উৎসব অনুষ্ঠানে অবলীলায় আমোদ স্ফূর্তি প্রকাশ করে যায়।
ইবনুল কাইয়েম র. আহকামু আহলিয্ যিম্মাহ ( যিম্মিদের বিধান) গ্রন্থে বলেন,’ বিজাতিদের নিজস্ব কুফুরি নিদর্শনকেন্দ্রিক কোনো উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা বিনিময়, যেমন তাদের ধর্মীয় উৎসব বা রোজার সময় বলা,’শুভ উৎসব ‘ অথবা ’এ উৎসবে আপনি আনন্দ-আপ্লুত হোন, ‘ ইত্যাদি। এ ধরনের শুভেচ্ছাবার্তা প্রদানকারী যদি কুফর থেকে পবিত্র থাকে তাহলে তা হারাম বলে বিবেচিত হবে। এটা ক্রসচিহ্ন সিজদাকারীকে শুভেচ্ছা প্রদানের মতোই। এটা বরং আল্লাহর কাছে অধিক পাপ বলে পরিগণিত। এটা আল্লাহর কাছে মদ্যপান, মানবহত্যা, যিনা ইত্যাদির  চেয়েও অধিক ঘৃণিত। দীন-ধর্মে যাদের কোনো অংশ নেই তারাই এসব কর্মে লিপ্ত হয়ে থাকে। তারা কত ঘৃণার কাজ করছে তারা নিজেরাই জানে না। যে ব্যক্তি কোনো পাপীকে পাপকর্ম সম্পাদনের পর শুভেচ্ছা জানাল, অথবা কোনো বিদআতপন্থীকে বিদআতকর্ম সম্পাদনের পর শুভেচ্ছা জানাল সে আল্লাহর ঘৃণা ও রোষের উপযোগী হল। [ আহকামু আহলিয্ যিম্মা:২০৫-২০৬ ]   
সমাপ্ত