ইসলাম ধর্মে সৎকর্ম কবুল হওয়ার শর্তাবলি

এই বয়ে ইসলাম ধর্মে সৎকর্ম কবুল হওয়ার শর্তাবলির উল্লেখ রয়েছে

اسم الكتاب: شروط قبول العمل الصالح في الإسلام


تأليف: محمد مرتضى بن عائش محمد


الناشر: المكتب التعاوني للدعوة وتوعية الجاليات بالربوة


نبذة مختصرة:كتاب باللغة البنغالية يحتوي على شروط قبول العمل الصالح في الإسلام.

 

ইসলাম ধর্মে সৎকর্ম কবুল হওয়ার শর্তাবলি
          شروط قبول العمل الصالح في الإسلام     
প্রণয়নে:
ড: মুহাম্মাদ মর্তুজা বিন আয়েশ মুহাম্মাদ

 

 


شروط قبول العمل الصالح في الإسلام         
تأليف
الدكتور/ محمد مرتضى بن عائش محمد

 


جميع الحقوق محفوظة للمؤلف
الطبعة الأولى عام 1436هـ - 2015 م

প্রথম সংস্করণ
সন 1436 হিজরী {2015 খ্রিস্টাব্দ }
সর্বস্বত্ব গ্রন্থকার কর্তৃক সংরক্ষিত  

 

 

الناشر
قسم دعوة وتوعية الجاليات
المكتب التعاوني للدعوة وتوعية الجاليات بالربوة في الرياض المملكة العربية السعودية

প্রকাশনায়:
দাওয়া ও প্রবাসী শিক্ষা বিভাগ
রাবওয়া দাওয়া, এরশাদ ও প্রবাসীদের মাঝে ইসলামী জ্ঞানদান কার্য়ালয়, রিয়াদ, সৌদি আরব

 


بسم الله الرحمن الرحيم
অনন্ত করুণাময় পরম দয়ালু আল্লাহর নামে
ভূমিকা
الحمد لله رب العالمين, والصلاة والسلام على خاتم الأنبياء والمرسلين, وعلى آله وأصحابه, وأتباعه, أما بعد:  
অর্থ: সমস্ত প্রশংসা সব জগতের সত্য প্রভু আল্লাহর জন্য, এবং শেষ নাবী ও রাসূল, তাঁর পরিবার-পরিজন, সাহাবীগণ ও তাঁর অনুসরণকারীগণের জন্য অতিশয় সম্মান ও শান্তি অবতীর্ণ হোক।
অতঃপর প্রকৃত ঈমানদার মুসলিম ব্যক্তির জেনে রাখা উচিত যে, মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যম হলো: প্রকৃত ইসলাম ধর্মের শিক্ষা মোতাবেক অন্তরে সঠিক ঈমান স্থাপন করার সাথে সাথে ইবাদত - উপাসনা  এবং সৎকর্ম সম্পাদন করা। সুতরাং আমাদের ইবাদত - উপাসনা এবং সৎকর্ম মহান আল্লাহর নিকটে কিভাবে গ্রহণযোগ্য হবে, সেটা জেনে রাখা দরকার। কেননা  প্রকৃত ইসলাম ধর্মে সৎকর্ম কবুল হওয়ার দুইটি শর্ত রয়েছে, উক্ত শর্তদুইটির বিষয়ে অত্র বইটিতে অতি সংক্ষেপে কিছু কথা উপস্থাপন করা হয়েছে।
আমি মহান আল্লাহর নিকটে প্রার্থনা করি, তিনি যেন এই বইটিকে তাঁর অনুগ্রহ ও দয়ায় কল্যাণদায়ক ও মঙ্গলময় করেন।
এই বইটির মধ্যে পবিত্র কুরআনের আয়াত অথবা নির্ভরযোগ্য হাদীসের বাংলা তরজমা বা অনুবাদ সঠিক পন্থায় করার চেষ্টা করেছি। তাই এখানে অনুবাদের পদ্ধতির বিষয়ে একটি কথা বলতে চায়;আর তা হলো এই যে,

 

 

 

 


অনুবাদের পদ্ধতি
এই বইটির মধ্যে পবিত্র কুরআনের আয়াত অথবা নির্ভরযোগ্য হাদীসের বাংলা তরজমা বা অনুবাদ পদ্ধতি একটু আলাদা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে; কেননা  অত্র বইটিতে আরবি ভাষার ভাবার্থের অনুবাদ বাংলা ভাষার ভাবার্থের দ্বারা করা হয়েছে। তাই কোনো সম্মানিত পাঠকের মনে অনুবাদ সম্পর্কে কোনো প্রকার সংশয় জেগে উঠলে, ওলামায়ে  ইসলামের বিশদ বিবরণ বা ব্যাখ্যা আরবী ভাষায় একটু গভীরতার সহিত দেখে নিলে সর্ব প্রকার সংশয় দূর হয়ে যাবে। এবং এই বইটির বাংলা অনুবাদ নির্ভরযোগ্য সাব্যস্ত হবে বলেই আশা করি ইনশা আল্লাহ। তবে এই বইটির দোষ-ত্রুটি, অসম্পূর্ণতা এবং মুদ্রণ প্রমাদ প্রভৃতি একেবারেই নেই, এই দাবি আমি করছি না। তাই এই বিষয়ে যে কোনো গঠনমূলক প্রস্তাব এবং মতামত আমার নিকটে সাদরে গৃহীত হবে ইনশা আল্লাহ।
প্রণয়নকারী
ড: মুহাম্মাদ মর্তুজা বিন আয়েশ মুহাম্মাদ
তাং 26/6/1436 হিজরী {15/4/2015 খ্রিস্টাব্দ }
    [email protected]

 

 

প্রকৃত ইসলাম ধর্মে সৎকর্ম কবুল হওয়ার প্রথম  শর্ত
মহান আল্লাহর নিকটে মানুষের অন্তরের ইচ্ছার উপরই নির্ভর করে সৎকর্ম কবুল হওয়ার বিষয়টি। তাই আমাদের অন্তরের ইচ্ছা বিশুদ্ধ ও পবিত্র হলে মহান আল্লাহর কাছে আমাদের সৎকর্ম গ্রহণযোগ্য হবে। পক্ষান্তরে আমাদের অন্তরের ইচ্ছা কপটতাপূর্ণ অথবা দুনিয়ার লালসাপূর্ণ হলে, আল্লাহর কাছে আমাদের কোনো সৎকর্ম গ্রহণযোগ্য হবে না। কেননা প্রত্যেকটি সৎকর্ম অন্তরের ইচ্ছার উপরই নির্ভর করে। এবং প্রত্যেকটি সৎকর্মের ফলাফল অন্তরের ইচ্ছা অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। তাই আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন:
"الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّة، وَلِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى".
(صحيح البخاري,  جزء من  رقم الحديث 54, وأيضاً صحيح مسلم, رقم الحديث 155 - (1907), واللفظ للبخاري),).
অর্থ: “প্রত্যেকটি সৎকর্মের ফলাফল মানুষের অন্তরের ইচ্ছা অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। এবং তাদের সৎকর্মের পরিণতি তাদের অন্তরের ইচ্ছার উপরই নির্ভর করে”।
 (সহীহ বুখারী, হাদীস নং 54 এবং সহীহ মুসলিম, হাদীস নং 155 -(1907) এর অংশবিশেষ। তবে হাদীসের শব্দগুলি সহীহ বুখারী থেকে নেওয়া হয়েছে]।
সুতরাং আমাদের জীবনের প্রত্যেকটি সৎকর্ম আমাদের অন্তরের বিশুদ্ধ ও পবিত্র ইচ্ছার সাথে সম্পাদন করা উচিত। তাই প্রকৃত ইসলাম ধর্মে সৎকর্ম কবুল হওয়ার প্রথম শর্ত হলো: এখলাস বা একনিষ্ঠতা, তাই আল্লাহরই সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যেই সৎকর্ম সম্পাদন করা অপরিহার্য। সুতরাং যে সৎকর্মে এখলাস বা একনিষ্ঠতা পাওয়া যাবে না, সে সৎকর্ম আল্লাহর নিকটে কবুল হবে না। তাই ইসলাম ধর্মের মৌলিক বিধান হলো এই যে, সব কাজে এখলাস বাস্তবায়ন করা অপরিহার্য এবং এখলাসের বিপরীত যে সমস্ত বস্তু আছে, সে সমস্ত বস্তু বর্জন করাও অপরিহার্য। সুতরাং লৌকিকতা, সুনাম ও সুখ্যাতির প্রত্যাশা, ইত্যাদি বর্জন করা জরুরি। তাই এই বিষয়টিকে লক্ষ্য করে এখানে কয়েকটি পয়েন্ট উপস্থাপন করা হলো:
প্রথমত: এখলাসের অর্থ:
এখলাসের শাব্দিক অর্থ হলো: একনিষ্ঠতা, একাগ্রতা এবং আন্তরিকতা ইত্যাদি।
এখলাসের পারিভাষিক অর্থ:
ওলামায়ে ইসলাম এখলাসের অনেকগুলি পারিভাষিক অর্থ পেশ করেছেন। তার মধ্যে থেকে এখানে কয়েকটি অর্থ পেশ করলাম:
1। এখলাসের সংজ্ঞায় এটা বলা হয়েছে যে, নিজের প্রতি মহান আল্লাহর সার্বক্ষণিক দৃষ্টির কথা স্মরণ রেখে, সৃষ্টি জগতের দৃষ্টি আকর্ষণের উদ্দেশ্য পরিত্যাগ করার নাম এখলাস।
2। এখলাসের সংজ্ঞার ব্যাপারে এটাও বলা হয়েছে যে, মানুষের সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কোনো আমল ছেড়ে দেওয়ার নাম হলো রিয়া বা কপটতা। আর মানুষের সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কোনো আমল করার নাম হলো শিরক। কিন্তু এই দুইটি বিষয় থেকে মুক্ত হয়ে একমাত্র আল্লাহর জন্য সৎকর্ম সম্পাদন করার নামই হলো এখলাস।

এখলাসের উক্ত পারিভাষিক অর্থগুলির  সারমর্ম হলো এই যে, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যেই সৎকর্ম সম্পাদন করাকে এখলাস বলা হয়।
 যাই হোক আমি পবিত্র কুরআন এবং নির্ভরযোগ্য হাদীসকে সামনে রেখে এখলাসের পারিভাষিক একটি অর্থ সম্মানিত পাঠক এবং সম্মানিতা পাঠিকার জন্য এখানে পেশ করলাম, আর তা হলো এই যে,
اَلْإِخْلاَصُ لِلَّهِ تَعَالَى, هُوَ: فِعْلُ الطَّاعَاتِ لِوَجْهِ اللهِ, وَتَنْقِيَتُهَا مِنْ شَوَائِبِ الشِّرْكِ وَالرِّيَاءِ.
অর্থ:  “এখলাস বা একনিষ্ঠতা  হলো এই যে, আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে তাঁর আনুগত্য করা এবং সেই আনুগত্যকে সকল প্রকারের শিরক ও তার অমেধ্য এবং কপটতার কলুষ থেকে বিশুদ্ধ ও নৈকষ্য রাখা”।
দ্বিতীয়ত: এখলাসের গুরুত্ব
প্রকৃত ইসলাম ধর্মে এখলাস ও একনিষ্ঠতার প্রতি যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে; কেননা  এখলাস ছাড়া  ইসলামে সৎকর্মের কোনো মূল্য নেই। পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন স্থানে মহান আল্লাহ মানব জাতিকে ইখলাসের সহিত নিষ্ঠাবান হয়ে তাঁর উপাসনা করার জন্য আদেশ প্রদান করেছেন। অতএব মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন:  
﴿وَمَا أُمِرُوا إِلاَّ لِيَعْبُدُوْا اللَّهَ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ﴾, (سورة البينة, جزء من الآية 5).
ভাবার্থের অনুবাদ: “আর সকল জাতির মানব সমাজকে এটাই আদেশ প্রদান করা হয়েছে যে, তারা যেন আল্লাহর উপাসনা করার সাথে সাথে তাঁর আনুগত্য করে একনিষ্ঠতার সহিত”।
(সূরা বাইয়েনা, আয়াত নং 5 এর অংশবিশেষ)।
মহান আল্লাহ আরো বলেছেন:  
﴿فَاعْبُدِ اللَّهَ مُخْلِصاً لَّهُ الدِّينَ﴾,
(سورة الزمر, جزء من الآية 2).
ভাবার্থের অনুবাদ: “সুতরাং তুমি আল্লাহর উপাসনা করার সাথে সাথে তাঁর আনুগত্য করবে একনিষ্ঠতার সহিত”।
(সূরা আয-যুমার, আয়াত নং 2 এর অংশবিশেষ)।
উক্ত আয়াতগুলির দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে  একনিষ্ঠতার সহিত তাঁর উপাসনা করা এবং সৎকর্ম সম্পাদন করা অপরিহার্য।  তাই মহান আল্লাহ বলেছেন:
﴿وَاعْبُدُوا اللّهَ وَلاَ تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا﴾
 (سورة النساء, جزء من الآية 36).
ভাবার্থের অনুবাদ: “আর হে সকল জাতির মানব সমাজ! তোমরা সঠিক পন্থায় আল্লাহর উপাসনা করবে এবং তাঁর সাথে অন্য কোনো বস্তুকে তাঁর অংশীদার স্থাপন করবে না”। (সূরা আন-নিসা, আয়াত নং 36 এর অংশবিশেষ)।
উক্ত বিবরণের দ্বারা এটা জানা গেলো যে, মানুষ যেই ইবাদত-উপাসনা করুক না কেনো, তা আল্লাহর কাছে গৃহীত হওয়ার প্রথম শর্ত হলো এখলাস অথবা একনিষ্ঠতা। তাই  এখলাসবিহীন কোনো আমলই আল্লাহর নিকটে গ্রহণযোগ্য হবে না। কেননা  এখলাস হলো সকল আমলের মূল মেরুদণ্ড। তাই এখলাসবিহীন আমলই মানুষের জাহান্নামে যাওয়ার জন্য একটি মহা উপকরণ হয়ে যায়। এই বিষয়টিকে প্রমাণিত করার জন্য এখানে একটি হাদীস উল্লেখ করা হলো:
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ, قَالَ: سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللَّه صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ: "إِنَّ أَوَّلَ النَّاسِ يُقْضَى يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَيْهِ رَجُلٌ اُسْتُشْهِدَ؛ فَأُتِيَ بِهِ؛ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ؛ فَعَرَفَهَا, قَالَ: فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا؟ قَالَ: قَاتَلْتُ فِيْكَ حَتَّى اسْتُشْهِدْتُ، قَالَ: كَذَبْتَ, وَلَكِنَّكَ قَاتَلْتَ لِأَنْ يُقَالَ جَرِيءٌ؛ فَقَدْ قِيلَ, ثُمَّ أُمِرَ بِهِ؛ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ حَتَّى أُلْقِيَ فِي النَّارِ، وَرَجُلٌ تَعَلَّمَ الْعِلْمَ وَعَلَّمَهُ وَقَرَأَ الْقُرْآنَ؛ فَأُتِيَ بِهِ؛ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ؛ فَعَرَفَهَا، قَالَ: فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا؟ قَالَ: تَعَلَّمْتُ الْعِلْمَ وَعَلَّمْتُهُ وَقَرَأْتُ فِيْكَ الْقُرْآنَ، قَالَ: كَذَبْتَ، وَلَكِنَّكَ تَعَلَّمْتَ الْعِلْمَ؛ لِيُقَالَ عَالِمٌ, وَقَرَأْتَ الْقُرْآنَ؛ لِيُقَالَ هُوَ: قَارِئٌ؛ فَقَدْ قِيلَ, ثُمَّ أُمِرَ بِهِ؛ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ حَتَّى أُلْقِيَ فِي النَّارِ، وَرَجُلٌ وَسَّعَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَأَعْطَاهُ مِنْ أَصْنَافِ الْمَالِ كُلِّهِ؛ فَأُتِيَ بِهِ؛ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ؛ فَعَرَفَهَا، قَالَ: فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا؟ قَالَ: مَا تَرَكْتُ مِنْ سَبِيلٍ تُحِبُّ أَنْ يُنْفَقَ فِيهَا إِلاَّ أَنْفَقْتُ فِيهَا لَكَ، قَالَ: كَذَبْتَ، وَلَكِنَّكَ فَعَلْتَ لِيُقَالَ, هُوَ: جَوَادٌ؛ فَقَدْ قِيلَ, ثُمَّ أُمِرَ بِهِ؛ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ, ثُمَّ أُلْقِيَ فِي النَّار".
(صحيح مسلم, رقم الحديث 152- (1905),).
অর্থ: আবু হুরায়রা [রাদিয়াল্লাহু আনহু] হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কে বলতে শুনেছি: তিনি বলেছেন: “নিশ্চয় কিয়ামতের দিনে সর্বপ্রথমে যে ব্যক্তির বিচার করা হবে,   সে ব্যক্তিটি এমনই একজন লোক যে, সে যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। অতঃপর তাকে উপস্থিত করা হবে এবং  তাকে আল্লাহর প্রদত্ত নিয়ামত ও অনুগ্রহের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে। সে তা স্বীকার করবে। মহান আল্লাহ তাকে  বলবেন: তুমি এই নিয়ামত ও অনুগ্রহ লাভ করার পর  সেটা কি কাজে ব্যবহার করেছো? সে ব্যক্তি উত্তরে বলবে: আমি সেই নিয়ামত ও অনুগ্রহ দ্বারা আপনার সন্তুষ্টিলাভ করার জন্য যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছি। মহান আল্লাহ তাকে  বলবেন:  তুমি তো মিথ্যা কথা বললে! তুমি যুদ্ধ করেছো এই জন্য যে, তোমাকে যেন সমাজে বলবান ও সাহসী তথা বীরপুরুষ বলা হয়। সুতরাং তা বলা হয়েছে। অতঃপর তার ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হবে এবং তাকে উবুড় করে তার চেহারার ওপর ভর করে ছেঁচড়ে ছেঁচড়ে ও ঘষটাতে ঘষটাতে টেনে নিয়ে গিয়ে তাকে জাহান্নামের অগ্নিগর্ভে নিক্ষেপ করা হবে।
দ্বিতীয় ব্যক্তি হলো এমন একজন লোক যে,  সে নিজে ইসলামের সঠিক জ্ঞান লাভ করেছে এবং অপরকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য সমাজের মধ্যে সেই জ্ঞান প্রচার করেছে, আর পবিত্র কুরআনেরও সে সঠিক  জ্ঞান লাভ করেছে। অতঃপর তাকেও উপস্থিত করা হবে এবং তাকে আল্লাহর প্রদত্ত নিয়ামত ও অনুগ্রহের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে। সে তা স্বীকার করবে। মহান আল্লাহ তাকে  বলবেন: তুমি এই নিয়ামত ও অনুগ্রহ লাভ করার পর সেটা কি কাজে ব্যবহার করেছো? সে ব্যক্তি উত্তরে বলবে: আমি ইসলামের সঠিক জ্ঞান লাভ করেছি এবং সেই জ্ঞান অপরকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য সমাজের মধ্যে সেই জ্ঞান প্রচার করেছি, আর পবিত্র কুরআনেরও সঠিক জ্ঞান লাভ করেছি আপনার সন্তুষ্টিলাভ করার জন্য। মহান আল্লাহ তাকে  বলবেন:  তুমি তো মিথ্যা কথা বললে! তুমি ইসলামের সঠিক জ্ঞান লাভ করেছো এই জন্য যে, তোমাকে যেন সমাজে মহাজ্ঞানী আলেম বলা হয়। সুতরাং তা বলা হয়েছে। এবং পবিত্র কুরআনেরও সঠিক  জ্ঞান লাভ করেছো এই জন্য যে, তোমাকে যেন সমাজে কারী বলা হয়। সুতরাং তা বলা হয়েছে। অতঃপর তার ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হবে এবং তাকে উবুড় করে তার চেহারার ওপর ভর করে ছেঁচড়ে ছেঁচড়ে ও ঘষটাতে ঘষটাতে টেনে নিয়ে গিয়ে তাকে জাহান্নামের অগ্নিগর্ভে নিক্ষেপ করা হবে।
আর তৃতীয় ব্যক্তি হলো এমন একজন লোক যে, তাকে মহান আল্লাহ সচ্ছলতা দিয়েছিলেন এবং সকল প্রকারের ধনসম্পদ প্রদান করেছিলেন। অতঃপর তাকেও উপস্থিত করা হবে এবং তাকে আল্লাহর প্রদত্ত নিয়ামত ও অনুগ্রহের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে। সে তা স্বীকার করবে। মহান আল্লাহ তাকে  বলবেন: তুমি এই নিয়ামত ও অনুগ্রহ লাভ করার পর সেটা কি কাজে ব্যবহার করেছো? সে ব্যক্তি উত্তরে বলবে: আমি ওই সব সম্পদ আপনার সন্তুষ্টিলাভ করার জন্য ব্যবহার করেছি। সুতরাং  এমন কোনো পথ নেই, যেই পথে ধনসম্পদ খরচ করা আপনি পছন্দ করেন, আর  আমি তাতে আপনার সন্তুষ্টিলাভ করার জন্য ধনসম্পদ খরচ করি নি।
মহান আল্লাহ তাকে  বলবেন:  তুমি তো মিথ্যা কথা বললে! তুমি ধনসম্পদ এই জন্য খরচ করেছো যে, তোমাকে যেন সমাজে দানবীর ব্যক্তি বলা হয়। সুতরাং তা বলা হয়েছে। অতঃপর তার ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হবে এবং তাকে উবুড় করে তার চেহারার ওপর ভর করে ছেঁচড়ে ছেঁচড়ে ও ঘষটাতে ঘষটাতে টেনে নিয়ে গিয়ে তাকে জাহান্নামের অগ্নিগর্ভে নিক্ষেপ করা হবে”।
[সহীহ মুসলিম, হাদীস নং 152 -(1905)]।
এই হাদীসটির দ্বারা প্রমাণিত হয় যে,  মানুষ সদা সর্বদা তার অন্তরের উদ্দেশ্যের বন্ধনে আবদ্ধ থাকবে।
 উল্লিখিত হাদীসটির তিন জন লোককে জাহান্নামের অগ্নিগর্ভে নিক্ষেপ করা হবে এই জন্য যে, তারা তাদের কর্মের দ্বারা প্রকৃতপক্ষে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভ করার ইচ্ছা রাখেনি এবং জান্নাত লাভ করারও ইচ্ছা করেনি। তাদের প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিলো সমাজের মধ্যে সুনাম ও খ্যাতি অর্জন করা। সুতরাং তারা সেটা ছাড়া অন্য কিছু লাভ করতে সক্ষম হবে না। তাই তারা জাহান্নামবাসী হবে। সুতরাং  মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যেই  একনিষ্ঠতার সহিত তাঁর উপাসনা করা এবং সৎকর্ম সম্পাদন করা ওয়াজেব। কেননা  আল্লাহর সাথে মানুষের সুসম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যম কেবল মাত্র এখলাস ও একনিষ্ঠতার সহিত তাঁর উপাসনা ও আনুগত্য বা বশ্যতা স্বীকার করা ছাড়া আর কোনো মাধ্যম নেই। তাই মহান আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থাপন করা বৈধ নয়। এবং মহান আল্লাহর নৈকট্যলাভের জন্য সকল প্রকার শিরক, রিয়া ও কপটতা বর্জন করা জরুরি। তাই এখানে একটি সঠিক হাদীস পেশ করা হলো:
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللَّه صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: "قَالَ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى: أَنَا أَغْنَى الشُرَكَاءِ عَنِ الشِّرْكِ, مَنْ عَمِلَ عَمَلاً أَشْرَكَ فِيْهِ مَعِيَ غَيْرِيْ, تَرَكْتُهُ وَشِرْكَهُ".
(صحيح مسلم, رقم الحديث 46- (2985),).
অর্থ: আবূ হুরায়রা [রাদিয়াল্লাহু আনহু] হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: মহান আল্লাহ বলেন: “আমি সমস্ত অংশীদারদের চাইতে অংশীদারিত্ব  বা শিরক স্থাপন করার সমস্ত কর্ম হতে অধিক অমুখাপেক্ষী। সুতরাং যে ব্যক্তি এমন কোনো কর্ম সম্পাদন করবে, যে  কর্মে সে আমার সাথে অন্য কোনো বস্তুকে অংশীদার স্থির বা স্থাপন করবে, আমি তাকে এবং তার অংশীদারিত্ব বা শিরক স্থাপন করার কাজটিকে পরিত্যাগ করবো”।
[সহীহ মুসলিম, হাদীস নং 46 -(2985)]।
এই হাদীসটির দ্বারা প্রমাণিত হয় যে,  যে সৎকর্মে মহান আল্লাহর সাথে কোনো বস্তুকে অংশিদার স্থাপন করা হবে, সেই সৎকর্মটিকে মহান আল্লাহ গ্রহণ করবেন না।  
তাই সকল প্রকারের শিরক, রিয়া বা কপটতা হতে দূরে থাকা অপরিহার্য। কেননা  মহান আল্লাহর উপাসনা ও আনুগত্যের কাজে কোনো অবস্থাতে সৃষ্টি জগতের সন্তুষ্টি লাভের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া জায়েজ নয়। তাই কপটতা, রিয়া, ভণ্ডামি,মোনাফেকি এবং লৌকিকতার প্রভাব থেকে নিজেকে রক্ষা করা অপরিহার্য। তাই  মহান আল্লাহর উপাসনা ও আনুগত্যের কাজে যে কোনো পদ্ধতিতে সৃষ্টি জগতের সন্তুষ্টি লাভের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া কোনো অবস্থাতে বৈধ নয়। কেননা  একেই তো বলা হয় রিয়া বা কপটতা। এবং এই কপটতা হলো অত্যন্ত জঘন্য বিষয়, এতে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জায়গাতে মানুষের সন্তুষ্টি লাভকে স্থান দেওয়া হয়। তাই সকল প্রকারের শিরক, রিয়া বা কপটতা সম্পূর্ণরূপে বর্জনীয়।
এখানে একটি কথা বলে এই বিষয়টিকে শেষ করার ইচ্ছা করছি। আর সেই বিষয়টি হলো এই যে, আল্লাহর সাথে এখলাস অথবা  একনিষ্ঠতা বজায় রাখতে হলে, আল্লাহর সাথে অন্তরে সততা এবং তাঁর তাকওয়া বা  ভয়, ভালোবাসা এবং অতিশয় শ্রদ্ধাসহকারে তাঁর আনুগত্যের সত্য ইচ্ছা পোষণ করা জরুরি বিষয়। এবং তাঁর অবাধ্যতা থেকেও বিরত থাকার দৃঢ় সংকল্প স্থির করতেই হবে। নচেৎ আল্লাহর সাথে এখলাস অথবা  একনিষ্ঠতা বজায় রাখা যাবে না। তাই একজন ঈমানদার মুসলিম ব্যক্তি তার সৎকর্মগুলিকে এমনভাবে গোপনে রাখার চেষ্টা করবে, যেমনভাবে সে তার কৃত পাপগুলিকে গোপনে রাখার চেষ্টা করে।

 

 

 

 
প্রকৃত ইসলাম ধর্মে সৎকর্ম কবুল হওয়ার দ্বিতীয় শর্ত
ইসলাম ধর্মের সকল কর্মে আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]এর আনুগত্য ও অনুসরণ করা অবশ্য কর্তব্য এবং ইসলাম ধর্মের শিক্ষা মোতাবেক তাঁর সকল নির্দেশ পালন করা একটি অপরিহার্য বিষয়, এই বিষয়টি সকল ঈমানদার মুসলিম ব্যক্তির জেনে রাখা উচিত। কেননা আল্লাহর উপাসনার ক্ষেত্রে এবং সৎকর্ম সম্পাদনের বিষয়ে আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]এর সঠিক পন্থায় অনুসরণ করা প্রকৃত ইসলাম ধর্মে সৎকর্ম কবুল হওয়ার দ্বিতীয় শর্ত। তাই আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]এর নির্দেশিত বিধি-বিধান এবং প্রদত্ত পদ্ধতি অনুযায়ী আল্লাহর ইবাদত এবং সকল প্রকারের সৎকর্ম সম্পাদন করা অপরিহার্য। তাই যে সৎকর্মে এখলাসের সাথে সাথে আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]এর অনুসরণ পাওয়া যাবে না, সে সৎকর্ম আল্লাহর নিকটে কবুল হবে না।
আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]এর অনুসরণ করার নির্দেশ মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে প্রদান করেছেন। মহান আল্লাহ বলেছেন:
﴿ قُلْ أَطِيْعُوا اللَّهَ وَأَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ﴾,
 ( سورة النور, جزء من الآية ٥٤ ).
ভাবার্থের অনুবাদ: “হে আল্লাহর রাসূল! তুমি বলে দাও! হে সকল জাতির মানব সমাজ! তোমরা ইসলামের শিক্ষা মোতাবেক সঠিক পন্থায় আল্লাহর আনুগত্য করো এবং আল্লাহর রাসূলের আনুগত্য করো”।
(সূরা আন-নূর, আয়াত নং 54 এর অংশবিশেষ)।
মহান আল্লাহ আরো বলেছেন:
﴿وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ﴾ , ( سورة النور, الآية ٥6 ).
ভাবার্থের অনুবাদ: হে ঈমানদার মুসলিম সমাজ! “আর তোমরা নামাজ প্রতিষ্ঠিত করো  আর জাকাত প্রদান করো এবং আল্লাহর রাসূলের আনুগত্য করো, তবেই তোমরা আল্লাহর দয়াপ্রাপ্ত হতে পারবে”।
(সূরা আন-নূর, আয়াত নং 56)।
মহান আল্লাহ আরো বলেছেন:
﴿وَٱتَّبِعُوْهُ لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُونَ﴾ , ( سورة الأعراف, جزء من الآية 158 ).
ভাবার্থের অনুবাদ: “এবং হে সকল জাতির মানব সমাজ! তোমরা আল্লাহর রাসূলের অনুসরণ করো, তবেই  তোমরা আল্লাহর প্রদত্ত সুখ দায়ক সৎপথ ইসলাম ধর্মের অনুগামী হতে পারবে”।
(সূরা আল আরাফ, আয়াত নং 54 এর অংশবিশেষ)।
এই সমস্ত আয়াতগুলির দ্বারা এটা প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহর রাসূলের আনুগত্য করা অপরিহার্য বিষয়। তাই তাঁর আনুগত্য পরিত্যাগ করলে কোনো ইবাদত -উপাসনা মহান আল্লাহ গ্রহণ করবেন না। কেননা  আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন:
"مَنْ أَحْدَثَ فِيْ أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ".
(صحيح البخاري, رقم الحديث 2697, وأيضاً: صحيح مسلم, رقم الحديث 17- (1718) ).
অর্থ:  “যে ব্যক্তি আমাদের এই ইসলাম ধর্মের মধ্যে এমন কোনো নতুন বিষয় ধর্মের কর্ম হিসেবে সংযুক্ত করবে, যে বিষয়টি প্রকৃতপক্ষে ইসলাম ধর্মের অংশ নয়, তাহলে সে বিষয়টি পরিত্যাজ্য বলেই বিবেচিত হবে”।
(সহীহ বুখারী, হাদীস নং 2697 এবং সহীহ মুসলিম, হাদীস নং 17-(1718)।
জেনে রাখা উচিত যে, মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] মহান আল্লাহর সর্বশেষ নাবী এবং রাসূল বা দূত । তিনি সকল জাতির মানব সমাজের জন্য প্রেরিত হয়েছেন। তাই তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা এবং তাঁর আনুগত্য ছাড়া আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন এবং আল্লাহর আনুগত্যের দাবির কোনো অর্থই থাকে না। কেননা  মহান আল্লাহ বলেছেন:
(مَنْ يُّطِعِ الرَّسُوْلَ فَقَدْ أَطَاعَ اللّهَ) , (سورة النساء,  جزء من الآية 80 ).  
ভাবার্থের অনুবাদ: “যে ব্যক্তি আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদের আনুগত্য করতে সক্ষম হবে, সেই ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর অনুগত ব্যক্তি হতে পারবে”।
(সূরা আন নিসা, আয়াত নং 80 এর অংশবিশেষ)।
মহান আল্লাহ আরো বলেছেন:
 (قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ) ,
(سورة آل عمران, الآية 31 ).
ভাবার্থের অনুবাদ: “হে আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ! তুমি বলে দাও! যদি তোমরা আল্লাহর ভালোবাসা লাভ করতে চাও, তাহলে আমার অনুসরণ করতে থাকো, তবেই আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপগুলিকে ক্ষমা করে দিবেন। যেহেতু আল্লাহ হলেন ক্ষমাবান ও দয়াবান”।
(সূরা আল ইমরান, আয়াত নং 31)।
সুতরাং আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর আনুগত্য ছাড়া কোনো ব্যক্তি  মহান আল্লাহর প্রদত্ত সুখ দায়ক সৎপথ ইসলামের অনুগামী হতে পারবে না এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভ করতে পারবে না।   
আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদের প্রতি আমাদের করণীয় বিষয়
আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]এর প্রতি আমাদের জন্য কতকগুলি করণীয় বিষয় রয়েছে, সেই বিষয়গুলির মধ্যে থেকে এখানে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা হলো:
1। আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আল্লাহর পক্ষ থেকে যা কিছু নিয়ে এসেছেন তা সত্য বলে মেনে নেওয়া অপরিহার্য।
2। প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা মোতাবেক আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর আনুগত্য করা, তাঁর বিচারে সন্তুষ্ট থাকা, তাঁর সিদ্ধান্ত ও উপদেশ সম্পূর্ণভাবে মেনে নেওয়া, এবং তাঁর আদর্শের অনুসরণ করা অপরিহার্য।
3। আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কে নিজের চেয়ে, নিজের মাতা-পিতা ও পরিবার-পরিজনের চেয়ে বেশি ভালোবাসাও অপরিহার্য। এই ভালোবাসার নিদর্শন হলো তাঁকে অতিশয় সম্মান করা, অতিশয় মর্যাদা প্রদান করা, তাঁর সাহায্য করা এবং তাঁকে অন্তর থেকে সমর্থন করা।
وصلى الله وسلم على رسولنا محمد, وعلى آله وأصحابه, وأتباعه إلى يوم الدين, والحمد لله رب العالمين.
অর্থ:  আল্লাহ আমাদের প্রিয় রাসূল মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজন, সাহাবীগণ এবং কিয়ামত পর্যন্ত তাঁর অনুসরণকারীগণকে অতিশয় সম্মান ও শান্তি প্রদান করুন।
সমাপ্ত

 


সূচীপত্র
ক্রমিক
নম্বর    বিষয়    পৃষ্ঠা
1    ভূমিকা     5
2    অনুবাদের পদ্ধতি    8
4    প্রকৃত ইসলাম ধর্মে সৎকর্ম কবুল হওয়ার প্রথম  শর্ত    10
5    এখলাসের অর্থ    13
6    দ্বিতীয়ত: এখলাসের গুরুত্ব    16
7    প্রকৃত ইসলাম ধর্মে সৎকর্ম কবুল হওয়ার দ্বিতীয় শর্ত    34
8    আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদের প্রতি আমাদের করণীয় বিষয়    42
9    সূচীপত্র    45

 

ইসলাম ধর্মে সৎকর্ম কবুল হওয়ার শর্তাবলি

বই সম্পর্কে

লেখক :

محمد مرتضى بن عائش محمد

প্রকাশক :

www.islamhouse.com

বিভাগ :

For New Muslim