একমাত্র বার্তা

একটি বার্তা মাত্র! : এ পুস্তিকায় তাওহীদের অভিন্ন বার্তা সম্পর্কে বলা হয়েছে, যা সকল নবী ও রাসূল প্রচার করেছেন, সেই আদম আলাইহিস সালাম থেকে নিয়ে আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত।
এ কিতাবের বিশেষ এক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, বর্তমান ইয়াহূদী ও খৃস্টানদের হাতে বিদ্যমান বাইবেল (ওল্ড টেস্টামেন্ট ও নিউ টেস্টামেন্ট)-এর আলোকে আল্লাহর তাওহীদ প্রমাণ করা হয়েছে।


একমাত্র বার্তা
رسالة واحدة فقط

< بنغالي- Bengal - বাঙালি>
        
ড. নাজি ইবন ইবরাহিম আল-আরফাজ





অনুবাদক: সানাউল্লাহ নজির আহমদ
সম্পাদক: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া  
رسالة واحدة فقط

        

د. ناجي بن إبراهيم العرفج

 



 

ترجمة: ثناء الله نذير أحمد
مراجعة: د/ أبو بكر محمد زكريا

 


উপহার


•    নিষ্ঠা, ইখলাস ও আন্তরিকতার সাথে সত্য অনুসন্ধানকারীদের প্রতি।
•    সচেতন বিবেকীদের প্রতি।


সূচীপত্র


الصفحة    العنوان    م
৩    পড়ার পূর্বে কতিপয় জিজ্ঞাসা    ১
৪    মূল বিষয়    ২
১৬    বাইবেলে আল্লাহর তাওহীদ (ওল্ড টেস্টামেন্টে এক আল্লাহ)    ৩
১৭    বাইবেলে আল্লাহর তাওহীদ (নিউ টেস্টামেন্টে এক আল্লাহ)    ৪
১৯    কুরআনুল কারিমে আল্লাহর তাওহীদ (অর্থাৎ এক আল্লাহ)    ৫
২১    পরিশিষ্ট    ৬
২৫    উপসংহার    ৭
২৯    শেষ অনুভূতি    ৮


 
ভূমিকা

পড়ার পূর্বে কতিপয় প্রশ্ন:
১). এই একই বার্তার উদ্দেশ্য কি ?
২). বার্তাটি সম্পর্কে বাইবেল কি বলে ?
৩). বার্তাটি সম্পর্কে কুরআন কি বলে ?
৪). অতঃপর বার্তা সম্পর্কে আপনার সিদ্ধান্ত কি ?


মূল বিষয়:
আদমকে সৃষ্টির পর থেকে একটি খাঁটি বার্তা মানবজাতির ইতিহাস জুড়ে মানুষের উপর ন্যস্ত ও তাদের সাথে বাহিত। মানুষকে বার্তাটি স্মরণ করিয়ে দিতে এবং তাদেরকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে সত্য এক ইলাহ নবী ও রাসূলদের প্রেরণ করেছেন, যেমন আদম, নূহ, ইবরাহিম, মুসা, ঈসা ও মুহাম্মদ আলাইহিমুস সালাতু ওয়াসসালাম। একই বার্তা পৌঁছানোর জন্যে তারা সবাই প্রেরিত, বার্তাটি হচ্ছে:

 

 

 

এক ইলাহ-ই সত্য, তিনিই স্রষ্টা এবং তিনিই মাবুদ
তিনি পাঠিয়েছেন:    এই বার্তা পৌঁছানোর জন্য
   ...   ... নূহকে    আল্লাহ এক, তোমরা শুধু তার ইবাদত কর
   ...   ... ইবরাহিমকে    আল্লাহ এক, তোমরা শুধু তার ইবাদত কর
   ...   ... মুসাকে    আল্লাহ এক, তোমরা শুধু তার ইবাদত কর
   ...   ... ঈসাকে    আল্লাহ এক, তোমরা শুধু তার ইবাদত কর
   ...   ... মুহাম্মদকে    আল্লাহ এক, তোমরা শুধু তার ইবাদত কর

    


আল্লাহ তাআলা দৃঢ় সংকল্পের অধিকারী বার্তাবাহক অনেক মহাপুরুষ (রাসূল) এবং তাদের ছাড়া আরো বহু রাসূল ও নবী প্রেরণ করেছেন, যাদের কতিপয়কে আমরা জানি এবং অনেককে আমরা জানি না, কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আঞ্জাম দেওয়ার লক্ষ্যে:
১). আল্লাহর ওহি গ্রহণ করা এবং তা স্ব স্ব কওম ও অনুসারীদের নিকট পৌঁছে দেওয়া।
২). মানুষকে তাওহীদ শিক্ষা দেওয়া ও ইখলাসের সাথে আল্লাহর ইবাদত আঞ্জাম দেওয়ার পদ্ধতি বর্ণনা করা।
৩). কথা ও কাজে উত্তম আদর্শ হিসেবে নিজেকে পেশ করা, যেন আল্লাহর দিকে চলার পথে মানুষেরা তাদের অনুসরণ করতে সক্ষম হয়।
৪). অনুসারীদেরকে আল্লাহর তাকওয়া, আনুগত্য ও তার আদেশ মানার দীক্ষা প্রদান করা।
৫). অনুসারীদেরকে দীনের বিধান ও উত্তম চরিত্র শিক্ষা দেওয়া।
৬). পাপী, মূর্তিপূজারী মুশরিক ও অন্যদের হিদায়েত ও সঠিক নির্দেশনা প্রদান করা।
৭). মানুষদের জানানো যে, মৃত্যুর পর তাদেরকে অবশ্যই উঠানো হবে এবং কিয়ামতের দিন তাদের আমলের হিসাব গ্রহণ করা হবে, অতএব যে ঈমান এনেছে ও নেক আমল করেছে তার প্রতিদান জান্নাত এবং যে আল্লাহর সাথে শরীক করেছে ও অবাধ্য হয়েছে তার ঠিকানা জাহান্নাম।

নিশ্চয় সকল নবী ও রাসূলের স্রষ্টা ও প্রেরণকারী মাত্র এক ইলাহ। বিশ্ব জগত এবং তার অন্তর্গত সকল সৃষ্টিজীব এক স্রষ্টার অস্তিত্বের ঘোষণা ও তার একত্বের সাক্ষী প্রদান করে। এক আল্লাহ-ই বিশ্ব জগতের স্রষ্টা, জগতে বিদ্যমান মানুষ, জীবজন্তু ও কীটপতঙ্গের স্রষ্টাও তিনি। তিনিই মৃত্যুর স্রষ্টা এবং স্রষ্টা স্থায়ী ও ক্ষণস্থায়ী জীবনের।
নিঃসন্দেহে ইয়াহূদী, খৃস্টান ও মুসলিমদের নিকট সংরক্ষিত পবিত্র কিতাবসমূহ আল্লাহর অস্তিত্ব ও তার তাওহিদের সাক্ষী প্রদান করে।
সত্যিকার সত্যানুসন্ধিৎসু যখন পবিত্র কিতাব ও কুরআনুল কারিমে ইলাহের তাৎপর্য বাস্তবধর্মিতার সাথে অধ্যয়ন করবে, তখন সে পর-মুখাপেক্ষী মিথ্যা ইলাহের বৈশিষ্ট্য থেকে আল্লাহর একক বৈশিষ্ট্যগুলো আলাদা করতে সক্ষম হবে, যার সাথে একমাত্র আল্লাহ তাআলাই বিশেষিত, ধারণাপ্রসূত মিথ্যা ইলাহের তাতে কোন অংশ নেই, আল্লাহর সেসব বৈশিষ্ট্য থেকে কতিপয় হচ্ছে:
১). সত্য ইলাহ স্রষ্টা, তিনি কারো সৃষ্টি নন।
২). সত্য ইলাহ একজন, তাঁর কোনো শরীক নেই। তিনি একাধিক নন। তিনি কারো পিতা বা পুত্র নন।
৩). আল্লাহ তা‘আলা সৃষ্টজীবের চিন্তা ও কল্পনা থেকে পবিত্র ও অনেক ঊর্ধ্বে, দুনিয়ায় কোনো চোখ তাকে আয়ত্ত করতে সক্ষম নয়।
৪). আল্লাহ শাশ্বত, চিরন্তন ও অবিনশ্বর। তিনি মৃত্যু বরণ করবেন না। তিনি কোনো বস্তুতে অন্তরীণ হন না কিংবা অনুপ্রবেশ করেন না। স্বীয় সৃষ্ট জগত থেকে কোনো বস্তুর তিনি দেহধারণ করেন না।
৫). আল্লাহ অমুখাপেক্ষী এবং নিজ সত্ত্বায় প্রতিষ্ঠিত। স্বীয় সৃষ্টিজীব থেকে সম্পূর্ণ অভাবমুক্ত। তিনি সৃষ্টিজীবের মুখাপেক্ষী হন না। তার পিতা ও মাতা নেই, আর না আছে স্ত্রী ও সন্তান। তিনি খাদ্য বা পানীয় বা কারো সাহায্যের মুখাপেক্ষী হন না, তবে যেসব মখলুক তিনি সৃষ্টি করেছেন সবাই তার মুখাপেক্ষী।
৬). মহান, পরিপূর্ণ ও সৌন্দর্যমণ্ডিত গুণাবলীর অধিকারী হিসেবে আল্লাহ একক, তার গুণাবলীতে কোনো সৃষ্টিজীব তার অংশীদার ও সমকক্ষ নয় এবং তার সাদৃশ্য কোনো বস্তু নেই।
আমাদের পক্ষে সম্ভব এসব মানদণ্ড ও গুণাবলী দ্বারা (এবং আরো অনেক গুণ, যার সাথে একমাত্র আল্লাহ তাআলাই বিশেষিত) ধারণাপ্রসূত যে কোনো ইলাহকে বাতিল ও প্রত্যাখ্যান করা।
আমাকে সুযোগ দিন, উল্লেখিত বার্তা প্রসঙ্গে পুনরায় ফিরে যাই এবং বাইবেল ও কুরআনুল কারিম থেকে কতক উদ্ধৃতি পেশ করি, যা আল্লাহর একক সত্ত্বাকে প্রমাণ করে, তবে তার পূর্বে নিম্নের অনুভূতিতে আমি আপনাদের শরীক করতে চাই:

 

 


সত্য ঘটনা হচ্ছে, আমার গবেষণা, খৃস্টানদের সম্পর্কে গভীর পড়াশুনা এবং তাদের সাথে আমার আলোচনা-পর্যালোচনা থেকে অবগত হয়েছি: তাদের নিকট “আল্লাহ” (তাদের কারো ধারণা মোতাবেক) নিম্নের সত্তাসমূহকে শামিল করে:
১. আল্লাহ পিতা।
২. আল্লাহ ছেলে।
৩. আল্লাহ রুহুল কুদস।
একটি স্পষ্ট বিষয় ও সরল কথা একজন বাস্তবধর্মী গবেষককে প্রলুব্ধ করে এসব আকিদা পোষণকারী খৃস্টানদের কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর প্রদানে বাধ্য করতে:
১. তোমরা বল “আল্লাহ এক” এর অর্থ কি, কারণ তোমরা তিন ইলাহের ইঙ্গিত দাও ?
২. আল্লাহ কি এমন এক, যিনি তিনের ভেতর প্রবেশ করেছেন; না তিন যারা একের ভেতর প্রবেশ করেছে: (১ এর ভেতর ৩, না ৩ এর ভেতর ১) ?
এসব বৈপরীত্যপূর্ণ বিশ্বাসসহ খৃস্টানদের কতিপয় আকিদা অনুসারে তাদের ধারণা: তিন ইলাহের ভিন্ন ভিন্ন দায়িত্ব, ভিন্ন ভিন্ন সত্ত্বা ও ভিন্ন ভিন্ন আকৃতি রয়েছে, যেমন:
১). আল্লাহ পিতা = তিনিই স্রষ্টা।
২). আল্লাহ ছেলে = তিনিই ত্রাণকর্তা (নাজাতদাতা)।
৩). আল্লাহ রুহুল কুদস = তিনি উপদেষ্টা (সম্মানিত)।
তাওরাত ও ইঞ্জিল কিতাবদ্বয়ে আল্লাহ সম্পর্কে যে বর্ণনা পেশ করা হয়েছে তার সাথে মাসীহ নিজেই আল্লাহর ছেলে বা সে-ই ইলাহ বা সে ইলাহের অংশ ইত্যাদি আকিদা সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক, যেমন ইঞ্জিলে স্পষ্টভাবে আছে, দুনিয়ায় কেউ আল্লাহকে দেখবে না:
“তোমরা কখনো তার কথা শ্রবণ করনি এবং তার চেহারা দেখনি”।
(যোহন 37: 5) বা (ইঞ্জিল ইউহানা: ৫:৩৭)
“কেউ তাকে কখনো দেখেনি এবং কেউ তাকে দেখতে সক্ষম নয়”।
(টিমোথির প্রতি প্রথমপত্র: ৬:16)
“এমন কেউ নেই আমাকে দেখবে ও জীবিত থাকবে”।
(যাত্রাপুস্তক ৩৩:20) বা (আল-খুরুজ ৩৩:২০)

এসব দলিল ও অন্যান্য দলিলের উপর ভিত্তি করে সততা ও আমানতদারীর সাথে কতক প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে অবাক হই, তাদের কথা “ঈসা-ই আল্লাহ” এর সাথে আমাদের পক্ষে কিভাবে সম্ভব বাইবেলের বর্ণনাকে সমন্বয় করা, যা প্রমাণ করে এমন কেউ নেই যে আল্লাহকে দেখেছে ও তার আওয়াজ শুনেছে?!
•    ঈসার জীবদ্দশায় ইয়াহূদীরা কি তাকে দেখে নি, দেখে নি ঈসাকে ঈসার পরিবার ও তার অনুসারীগণ, তারা কি দেখেনি ঈসা মাসীহকে (তাদের কারো ধারণায় যে আল্লাহর ছেলে) এবং তার আওয়াজ শ্রবণ করে নি?
•    তাওরাত, ইঞ্জিল কত স্পষ্টভাবে সাব্যস্ত করে আল্লাহকে কেউ দেখবে না, কেউ তাকে শ্রবণ করবে না, অতঃপর আমরা এমন লোকেরও সন্ধানও লাভ করি (খৃস্টান জগতে) যার বিশ্বাস তারা যে ঈসার সত্ত্বাকে দেখেছে এবং যার শব্দ শ্রবণ করেছে সে ঈসাই আল্লাহ বা আল্লাহর ছেলে? তাহলে আল্লাহর সত্ত্বায় কোনো গোপন রহস্য আছে কি, (যা আমাদের বোধগম্য নয়)?
বস্তুত তাওরাত তার বিপরীত বর্ণনাকেই জোরালোভাবে প্রমাণ করে, যেমন আল্লাহ সম্পর্কে বলে: “নিশ্চয় আমিই রব, এ জগতে দ্বিতীয় কোনো রব নেই। আমি লুকিয়ে কথা বলি নি এবং আমার উদ্দেশ্যকে আমি গোপন করি নি। নিশ্চয় আমিই আল্লাহ এবং আমি সত্য কথাই বলি। আমি তাই প্রকাশ করি যা সত্য”। (যিশাইয় ৪৫:১৯)

 

এবার আমরা বাইবেল ও কুরআনুল কারিমের আলোকে আল্লাহর বাস্তবতা ও হাকিকত অনুসন্ধানে ব্রতী হই সমানভাবে, বিনীত অনুরোধ তার আগে আল্লাহ সম্পর্কে আপনাদের মতামত ও চিন্তাগুলো সঙ্গী করুন এবং কুরআনের আয়াত ও বাইবেলের উদ্ধৃতিগুলো গভীরভাবে অধ্যয়ন করুন। অতঃপর ইনসাফপূর্ণ বাস্তবধর্মী ও পর্যালোচনার দৃষ্টিতে অত্র কিতাব পড়ে সমাপ্ত করুন।

 

 

 

 

 
বাইবেল (ওল্ড টেস্টামেন্ট)-এ রয়েছে এক আল্লাহই হক:
    হে ইসরাইল শোন: সেই রব, তিনি আমাদের ইলাহ, একই রব। আত-তাসনিয়া: (৬:৪)
    এক আল্লাহ কি আমাদের জীবনের রূহ সৃষ্টি করেন নি এবং তিনি কি আমাদের রিযিক দেন নি? মালাখি: (২:১৫)
    যাতে তোমরা জান ও আমার ওপর ঈমান আন এবং ভালো করে আয়ত্ত কর যে, আমিই আমি, এবং আমিই সে আল্লাহ। আমার পূর্বে কোনো ইলাহ ছিল না এবং আমার পরেও কোনো ইলাহ হবে না। আমিই রব, আমি ব্যতীত কোন মুক্তিদাতা নেই। ইশইয়া: (৪৩:১০-১১)
    আমি সে সত্ত্বা যে সর্বপ্রথম ও সর্বশেষ, আমি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। আমার সদৃশ কে আছে? ইশইয়া: (৪৪:৬)
    আমি কি রব নই এবং আমি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই এমন নয়? আমিই সদাচারী ও মুক্তিদাতা, দ্বিতীয় কোনো ইলাহ নেই। ইশইয়া: (৪৫:২১)

 


এক আল্লাহই হক বাইবেল (নিউ টেস্টমেণ্ট)-এ:
    সেটাই স্থায়ী সুখী জীবন, যাতে তারা আপনার পরিচয় লাভ করেছে যে, আপনি একাই সত্য ইলাহ এবং (আরও পরিচয় লাভ করেছে) ইয়াসূ (ঈসা) মাসীহ এর, যাকে আপনি প্রেরণ করেছেন।
ইঞ্জিল ইউহোন্না: (১৭:৩)
    তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর, যিনি তোমাদের ইলাহ এবং শুধু তার জন্য খেদমত উৎসর্গ কর।
ইঞ্জিল মাত্তা: (৪:১০)
    হে ইসরাইল শোন, সেই রব, তিনিই আমাদের ইলাহ। তিনিই একমাত্র রব। .... কারণ আল্লাহ এক, তিনি ব্যতীত দ্বিতীয় কেউ নেই।
ইঞ্জিল মার্ক: (১২:২৮-৩৩)
    কারণ আল্লাহ এক এবং আল্লাহ ও বান্দার মাঝে মাধ্যমও এক। তিনি হলেন মানুষ মাসীহ ইয়াসূ (ঈসা)।
থিমোসের প্রতি প্রথমপত্র: (২:৫)
    তাদের কেউ ঈসার নিকট আসল এবং বলল: হে আমার সৎ (সালেহ) নেতা, সে ভালো কাজটি কি যা আমি করব, যেন স্থায়ী জীবন হাসিল হয়? তাকে (ঈসা) উত্তর দিলেন: তুমি আমাকে কেন সালেহ বল? একজন ব্যতীত কেউ সালেহ নয়, তিনিই হলেন আল্লাহ”।
ইঞ্জিল মাত্তা: (১৯:১৬-১৭) মালিক জেমসের কপিতে এরূপ রয়েছে।

 


কুরআনুল কারিমে এক আল্লাহ-ই সত্য:
    “বল আল্লাহ এক, তিনি অমুখাপেক্ষী, তিনি জন্ম দেননি এবং জন্ম গ্রহণও করেননি এবং তার সমকক্ষ কেউ নেই”। সূরা নাম্বার: ১১২: আয়াত: (১-৪)
    “হে আমার কারা সঙ্গীদ্বয়, বহু ভিন্ন ভিন্ন রব ভালো নাকি মহাপরাক্রমশালী এক আল্লাহ?!” সূরা নাম্বার: ১২, আয়াত: (৩৯)
    ‘নিশ্চয় তোমাদের ইলাহ এক’। সূরা নাম্বার: (৩৭), আয়াত: (৪)
    “আল্লাহর সাথে কি কোন ইলাহ আছে, বল তোমরা প্রমাণ নিয়ে আস যদি সত্যবাদী হও”। সূরা নাম্বার: ২৭: আয়াত: (৬৪)
    “তারা অবশ্যই কুফরি করেছে যারা বলেছে ইলাহ হচ্ছে তিন সত্ত্বার তৃতীয় সত্ত্বা, অথচ এক ইলাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, তারা যা বলে তা থেকে যদি তারা বিরত না হয়, অবশ্যই তাদের কাফেরদের মর্মন্তুদ শাস্তি স্পর্শ করবে”। সূরা নাম্বার: ৫, আয়াত: (৭২)
 
পরিশিষ্ট
নিঃসন্দেহে বাইবেল ও কুরআনুল কারিমের এসব দলিল ও অন্যান্য শত শত দলিল ‘আল্লাহ এক তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই’ এমনভাবে প্রমাণ করে যে, তাতে সন্দেহের কোনো অবকাশ থাকে না। যেমন বাইবেল বলে: “হে ইসরাইল শোন: রব-ই আমাদের ইলাহ, রব একজন। নিশ্চয় আল্লাহ এক, তিনি ব্যতীত দ্বিতীয় কেউ নেই”। ইঞ্জিল মার্ক: (১২:৮-৩৩) এ কথাই কুরআনুল কারিম বলছে এভাবে: “বল, আল্লাহ এক”। সূরা নাম্বার: ১১৩, আয়াত: ১।
বাইবেল এতটুকুন বলেই ক্ষান্ত হয় নি যে, আল্লাহ এক, বরং সে নিশ্চিত করেছে আল্লাহ-ই সৃষ্টিকর্তা এবং তিনি-ই মুক্তিদাতা: “তোমরা জান ও আমার উপর ঈমান আন, এবং ভালোভাবে স্মরণ কর আমিই আমি, আমি আল্লাহ। আমার পূর্বে কোনো ইলাহ ছিল না এবং আমার পরেও কোনো ইলাহ হবে না। আমি রব এবং আমি ব্যতীত কোনো মুক্তিদাতা নেই”। ইশইয়া: (৪৩:১০-১১)
এ থেকে স্পষ্ট হয় যে, ঈসার উলুহিয়্যাহ (ইবাদতের হক) বা রুহুল কুদসের উলুহিয়্যাহ বা আল্লাহ ব্যতীত তাদের কারো উলুহিয়্যার কথার কোনো ভিত্তি ও কোনো প্রমাণ নেই। তারা আল্লাহর সৃষ্ট কতক মখলুক ব্যতীত কিছু নয়, তাদের কোনো কর্তৃত্ব নেই। তারা আল্লাহ নয়, আল্লাহর জ্যোতিও নয়, অনুরূপ আল্লাহর শরীর বা প্রতিকৃতিও নয়। তার সদৃশ কোনো বস্তু নেই, যেমন উল্লেখ করেছে বাইবেল ও কুরআনুল কারিম।
আল্লাহ ব্যতীত অন্য ইলাহের ইবাদত করা ও পথভ্রষ্টতার কারণে আল্লাহ ইয়াহূদীদের উপর গোস্বা করেছেন: “রবের গোস্বা তাদের উপর অবধারিত হয়েছে”। আল-আদাদ: (২৫:৩), অনুরূপ মূসা আলাইহিস সালাম তাদের স্বর্ণের গো বৎস ধ্বংস করেছেন।
ইতিহাস সাক্ষী, একত্ববাদে বিশ্বাসী এক দল খৃস্টান শাস্তি ও বিভিন্ন চাপের সম্মুখীন হয়েছে, কারণ তারা আল্লাহর তাওহিদের উপর ঈমান এনেছিল ও অস্বীকার করেছিল ঈসার (আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠ) দীনের বিকৃতি, পক্ষান্তরে পরিহার করে ছিল পল ও তার অনুসারীদের হাতে সৃষ্ট ত্রিত্ববাদের বিদ‘আত।
মোদ্দাকথা: আদম, নূহ, ইবরাহিম, মূসা, ঈসা ও মুহাম্মদ আলাইহিমুস সালামকে আল্লাহ প্রেরণ করেছেন, যেন তারা মানব জাতিকে তার উপর ঈমান আনার দাওয়াত দেয় ও তার ইবাদতের দিকে আহ্বান করে, যার কোনো শরীক ও সমকক্ষ নেই, তিনি পবিত্র। তাদের সবার বার্তা ছিল:

 

 

নবী ও রাসূলদের বার্তা যেহেতু এক, তাই তাদের দীনও এক ছিল, অতএব সকল নবী ও রাসূলের দীন কি ছিল?

সন্দেহ নেই, তাদের সবার রিসালাতের মূল ভিত্তি ছিল “আত-তাসলিম” লিল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর জন্য আত্মসমর্পণ, লক্ষণীয় হচ্ছে এ তাসলিম শব্দই “ইসলাম” শব্দের অর্থ ও তাৎপর্যকে প্রকাশ করে।

কুরআনুল কারিম স্পষ্ট বলেছে যে, সকল নবী ও রাসূলের সত্য দীন (ধর্ম) ইসলাম, কুরআনুল কারিমের এই বাস্তবতা বাইবেলেও অনুসন্ধান করা যেতে পারে। (পরবর্তী পুস্তিকায় এই বাস্তবতা আমরা বাইবেল অনুসন্ধান করব, ইনশাআল্লাহ)।

উপসংহার:
মুক্তির জন্য আমাদের ওপর ওয়াজিব এ বার্তা গ্রহণ করা এবং সততা ও ইখলাসের সাথে তার উপর ঈমান আনা, তবে এতটুকুন আমল যথেষ্ট নয়! বরং সকল নবী ও রাসূলের উপর ঈমান আনা জরুরি, যার অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর ঈমান আনা, তার হিদায়াত অনুসরণ করা ও তার উপর আমল করা। চিরস্থায়ী কল্যাণময় জীবনের পথ এটাই।

হে ইখলাসের সাথে হাকিকত অন্বেষণকারী ও মুক্তি প্রেয়সী, হয়তো তুমি বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করবে এবং গভীরভাবে মনোযোগ দিবে এখন থেকেই, তবে অবশ্যই সময় ফুরিয়ে যাওয়ার পূর্বে, মৃত্যুর পূর্বে, যা অকস্মাৎ চলে আসে! কে জানে মৃত্যু কখন আসবে?


জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়ের প্রতি চিন্তা ও পুনরায় গভীর দৃষ্টি দেওয়ার পর বিবেকী অন্তর ও সত্য হৃদয় ফয়সালা করতে সক্ষম হবে যে, আল্লাহ এক, তার কোনো শরীক নেই এবং তার কোনো সন্তানও নেই। অতঃপর তার উপর ঈমান আনবে এবং একমাত্র তার ইবাদত করবে। আরো বিশ্বাস করবে যে, মুহাম্মদ নবী ও রাসূল যেমন নবী ও রাসূল ছিল নূহ, ইবরাহিম, মুসা ও ঈসা।
    আপনি যদি চান এখন বলতে পারেন:
 
   
 
     

এ সাক্ষ্যই চিরস্থায়ী সুখময় জীবনের পথে প্রথম পদক্ষেপ, এবং এটাই জান্নাতের দরোজাসমূহের প্রকৃত চাবি।
যখন আপনি এ রাস্তা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাহলে আপনি আপনার বন্ধুর সাহায্য গ্রহণ করুন অথবা মুসলিম প্রতিবেশীর সাহায্য গ্রহণ করুন নিকটবর্তী মসজিদের জন্য অথবা ইসলামিক সেন্টারের জন্য অথবা আমার সাথে যোগাযোগ করে আমাকে ধন্য করুন অথবা আমার নিকট চিঠি লিখুন, (আমি নিজেকে ধন্য মনে করব)।

﴿قُلۡ يَٰعِبَادِيَ ٱلَّذِينَ أَسۡرَفُواْ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِمۡ لَا تَقۡنَطُواْ مِن رَّحۡمَةِ ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ يَغۡفِرُ ٱلذُّنُوبَ جَمِيعًاۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلۡغَفُورُ ٱلرَّحِيمُ ٥٣ وَأَنِيبُوٓاْ إِلَىٰ رَبِّكُمۡ وَأَسۡلِمُواْ لَهُۥ مِن قَبۡلِ أَن يَأۡتِيَكُمُ ٱلۡعَذَابُ ثُمَّ لَا تُنصَرُونَ ٥٤ وَٱتَّبِعُوٓاْ أَحۡسَنَ مَآ أُنزِلَ إِلَيۡكُم مِّن رَّبِّكُم مِّن قَبۡلِ أَن يَأۡتِيَكُمُ ٱلۡعَذَابُ بَغۡتَةٗ وَأَنتُمۡ لَا تَشۡعُرُونَ ٥٥ ﴾ [الزمر: ٥٢،  ٥٤]  
“বল, হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের উপর বাড়াবাড়ি করেছো তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। অবশ্যই আল্লাহ সকল পাপ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আর তোমরা তোমাদের রবের অভিমুখী হও এবং তোমাদের উপর আযাব আসার পূর্বেই তার কাছে আত্মসমর্পণ কর। তার (আযাব আসার) পরে তোমাদেরকে সাহায্য করা হবে না। আর অনুসরণ কর উত্তম যা নাযিল করা হয়েছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে, তোমাদের উপর অতর্কিতভাবে আযাব আসার পূর্বে। অথচ তোমরা উপলব্ধি করতে পারবে না”। সূরা আয-যুমার: (৫৩-৫৫)

 

এখানে আরেকটি বিষয়...

সর্বশেষ অনুভূতি:

 

 

 

 

 

 

আল্লাহ চাইলে পরবর্তী পুস্তিকায় এ প্রশ্ন ও অন্যান্য প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধান করব।
আরো জানার জন্য অথবা প্রশ্নের জন্য অথবা মন্তব্যের জন্য লেখকের সাথে নিম্নের ঠিকানায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে আশা করছি কোন দ্বিধা করবেন না:
পোষ্টবক্স নং ৪১৮, আল-হুফুফ, আল-আহসা, ৩১৯৮২, সৌদী আরব।

ص. ب.  418 – الهفوف – الأحساء  31982 المملكة العربية السعودية
 [email protected]
[email protected]
অথবা আমাদের অফিসের নম্বর....
أو مكتب ..............

 

(যেকোনো পরিবর্তন ও সংশোধনকে সাধুবাদ জানাই)